বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

জামাল উদ্দিন এর ফেইসবুক ওয়াল থেকে

নেতৃত্বের সংকটে মুসলীম উম্মাহ

পৃথিবীর দিকে দিকে আজ মুসলমানেরা নির্যাতিত।  অর্ধশতকের বেশি মুসলীম রাষ্ট্র থাকার পরও মুসলমানদের পক্ষে কথা বলার মতো নেতা নেই। এমন কোন মুসলীম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র নেই যার শাসন ভার অমুসলমানদের হাতে। নামে মাতে ওআইসি, আরবলীগ থাকলেও নির্যাতনের প্রতিবাদ করার মতো সাহস দেখাতে পারেনা সংস্থা দুইটি। দশকের পর দশক স্বাধীনতার দাবীতে অটল থাকায় ফিলিস্তিনের নারী-শিশুসহ বেসামরিক জনগন ইয়াহুদীবাদী ইসরাঈলের হাতে কঁচু কাটা হচ্ছে।  পারমাণবিক অস্ত্রের অজুহাতে সুসংগঠিত,  মুসলিম সভ্যতার সুতিকাঘার ইরাকের জনগনের রক্ত এক দশক ধরে লাল হচ্ছে লোহিত সাগরের পানি।

বৌদ্ধ মূর্তি ভাঙ্গার অপরাধে আফগান জাতিকে তচনছ করে দিয়েছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী। আরব বসন্তের হাওয়ায় পুরো ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে সিরীয় জাতিকে।  তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি কর্ণেল গাদ্দাফির লিবিয়া। ইয়ামিনে হামলায় জড়িয়ে পড়েছে সৌদি বাদশা। অবশ্যই এ কথা সত্য যে সৌদির বর্তমান রাজপরিবার ক্ষমতা গ্রহনের আগে মুসলমানদের পক্ষে সৌদিআরবের অবস্থান আরো দুর্বল ছিল। ইরান বিপ্লবের মাধ্যমে দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকলেও মুসলমানদের পক্ষে প্রকাশ্যে তাদের কোন ভূমিকা দেখা যায় না।

মালেশিয়া মুসলমানদের পক্ষে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করে। তবে নিজেদের দেশে ইসলাম প্রচারকদের বিভিন্নভাবে নিপিড়ন চালায়। মাহাথির মোহাম্মদের সময় ইসলামিক লিডার আনোয়ার ইব্রাহিমকে মিথ্যা অভিযোগে সাজা প্রদান তার উদাহরন।

অতিসাম্প্রতিককালে তুরস্কের কিছু ভূমিকা প্রকাশ্যে এসেছে। তবে অভ্যন্তরীন ভাবে তারা সরকার পরিচালনায় সিরিয়াস বেগ পাচ্ছে।  মিশরতো নিজের রক্তে নিজে গোসল করে মজা পাচ্ছে। 

এ হলো মুসলীম রাষ্ট্র গুলোর অবস্থা।  ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে মুসলীম নেতৃবৃন্দ কেউ আমেরিকা আবার কেউ রাশিয়ার পক্ষে।  আমাদের মাতৃভূমির নেতৃত্ব ক্ষমতার স্বার্থে সনাতনদের তোয়াজ করে শতভাগ। বৈধ অধিকারের চেয়েও অনেক বেশি তাদের দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রাপ্তিতেও তাদের মন ভরছেনা।

স্বাধীন আরাকানের মুসলমানেরা আজ মায়ানমারের অবৈধ নাগরিক। সেখানকার শান্তির দূত প্রত্যহ মুসমানের রক্ত না দেখলে দিনের কর্মসূচী ঠিকভাবে পালন করতে পারেনা। তাই সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছে নির্মমভাবে মুসলিম হত্যার।

শান্তিতে নোবেল প্রাপ্ত মুসলীম নামদারীরা কোথায়? কোথায় ইরানের শান্তির নেত্রী শিরিন এবাদি? কোথায় পাকিস্তানের মালালা ইউসুফ জাঈ? বাংলাদেশের ডক্টর ইউনুসের শীতনিদ্রা কি আদৌ ভাঙবে? তিউনিশিয়ার তাওয়াক্কুল কোথায় গেল?

আজ মুসলমানদের শত্রু মুসলমান। শিয়া-সুন্নী মতপ্রার্থক্যের মধ্যে নতুন করে সৃষ্টি হয়েছে আহলে হাদিস। আছে তাবলীগ জামায়াত আছে নিরামিষ হিসাবে। কারো ধারেও নেই কারো পাঁচেও নেই। সারা বিশ্বের মুসলমানদের কি হলো সেদিকে তাকানোর সে সময় তাদের নেই। শুধু নিজেদেন ইমান বাঁচানোকে ফরজ মনে করে তারা। আছে দেওবন্দ পন্থি কাওমী মাদ্রাসা শিক্ষা। তাদের চিন্তা শুধু নিজেদের নিয়ে নিজেরা বাঁচি।

মুসলিম নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারনে আজ পৃথিবীর আনাছে কানাছে মুসলমানেরা মার খাচ্ছে। উম্মাহর এ সংকটময় মূহূর্তে প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্ব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন